[{{mminutes}}:{{sseconds}}] X
Пользователь приглашает вас присоединиться к открытой игре игре с друзьями .
Обычный бенгальский
(3)       Используют 15 человек

Комментарии

vnest 18 августа 2021
Какие красивые буквы..
Мультилингва 7 августа 2021
Словарь включён в программу мероприятия [08.08.21 - 29.09.21] Мультилингва МЕГА 3.
Мультилингва 15 августа 2018
Словарь включён в программу мероприятия [18.07.18 - 07.09.18] Мультилингва МЕГА 2.
Написать тут
Описание:
Тексты длиной 270-300 символов.
Автор:
Phemmer
Создан:
15 декабря 2017 в 00:40 (текущая версия от 12 июля 2020 в 17:24)
Публичный:
Нет
Тип словаря:
Тексты
Цельные тексты, разделяемые пустой строкой (единственный текст на словарь также допускается).
Информация:
Для набора использовать раскладку Бенгальский инскрипт

Поиск и подбор материала: I_rena
Нарезка отрывков словаря: Phemmer
Содержание:
1 সত্যিই তাই! অদ্ভুত ব্যাপার। বলাই ডুবল না। কাগজের নৌকোগুলোর মতো ভেসে রইল। দারুণ মজার ব্যাপার এই জলের উপর পা ফেলে ফেলে হাঁটা। কুকুরটা আগে আগে তরতরিয়ে যাচ্ছে। বাবা-মা, বুনু যদি এই অদ্ভুত কান্ডটা দেখত! কেউ জানেই না যে জলের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায়। কিন্তু এখন বুনুকে ডেকে দেখানোর সময় নেই।.
2 মাস বদলাতে না বদলাতে রাজা বদলায়। তা বর্তমানে যিনি রাজা হয়েছেন তিনি প্রথমদিনেই ঠিক করেছেন যে নিশ্চিন্তপুর আক্রমণ করবেন। এই শস্যশ্যামলা ঝকঝকে নিশ্চিন্তপুরের ওপর তার বহুদিনের লোভ। কবে যে উনি আক্রমণ করে বসবেন তা কে জানে। আমাদের রাজা তো ভয়ে আধমরা হয়ে রয়েছেন। তিনি যুদ্ধের বিন্দুবিসর্গ বোঝেন না।.
3 কবিতা-সাহিত্য-বিজ্ঞানচর্চা নিয়ে মেতে থাকেন। নিশ্চিন্তপুরের সব বাসিন্দারই এক দশা। যুদ্ধের কথা শুনে অনেকে যুদ্ধের উপর কবিতা লিখছে। অনেকে যুদ্ধবিরোধী ভাষণ দিচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধে যেতে বললেই তারা খাটের তলায় লুকোবে। তা আমরা ভেবে দেখলাম, তোমাদের জগদ্দলপুরে তো মারপিট-খুনোখুনি লেগেই থাকে।.
4 মনের সুখে টেলিফোনটা নিয়ে উলটোপালটা নম্বর ডায়াল করে লোককে বিরক্ত করতে লাগল। একটা সিনেমাতে দেখেছিল রিসিভারটাতে রুমাল চাপা দিয়ে কথা বললে গলার আসল স্বর বুঝতে পারা যায় না। তাই সেই পদ্ধতি ব্যবহার করল। তারপর মনের মতন নম্বর ডায়াল করে লোককে ভয় দেখাতে লাগল। কিন্তু কপালে দুর্ভোগ থাকলে যা হয়।.
5 দিন দুয়েক পর থেকেই ক্লাসে ওর পাশে যে ছেলেটা বসেছিল সেই সৌরদীপের সঙ্গে সোহমের বেশ ভাব হয়ে গেল। দীপও ওর মতন দুষ্টুমি করার জন্যে নিউ হরাইজেন স্কুলে এসেছে। বেশ চটপটে চালাকচতুর ছেলে সে। ক্লাসের অন্য ছেলেগুলোর মতন গম্ভীর চুপচাপ নয়। ওর সঙ্গে ভাব হওয়ার পর সোহমের বন্ধু না থাকার দুঃখটা কিছু কমল।.
6 সেটা দেখে সোহমের কেমন যেন লাগল। দীপ তো এই চকোলেট খেতে খুব ভালোবাসে। কিন্তু দীপ যেন বদলে গেছে। যত দিন যাচ্ছে সোহমের মনে সেই ধারণাই যেন বদ্ধমূল হতে লাগল। ওই শরীর খারাপটার পর থেকেই দীপ যেন কেমন একটা হয়ে গেছে। ওর ওই প্রাণোচ্ছল দুষ্টু দুষ্টু ভাবটা আর নেই। কেমন যেন একটা অন্যরকম চটপটে ভাব।.
7 প্রতিটা ঘরে চারজন করে শোওয়ার ব্যবস্থা। সোহম, দীপ, আকাশ আর রত্নাভ বলে একটা ছেলে এই চারজন একটা ঘরে শোয়। সেদিন রাতে কীসের একটা শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল সোহমের। চোখ খুলে সে দেখল, দীপ তার খাট থেকে নেমে দরজার দিকে হেঁটে যাচ্ছে। ঘরের দরজাটা খুলে দীপ বাইরে চলে গেল। কোনও এক অজানা আশঙ্কায় সোহমের বুক কেঁপে উঠল।.
8 ঘরটাতে কেমন একটা যেন গন্ধ। মানে, ভালো গন্ধ নয়। নানারকম শব্দও হচ্ছে। আবছা আলো চোখ সওয়া হয়ে যেতে আলোর সুইচটা দেখতে পেল সোহম। ফট করে আলোটা জ্বালতেই যা দেখল তাতে ওর পিলে চমকে গেল। ঘরটায় সারি সারি খাঁচা রাখা! কোনও খাঁচায় ইঁদুর, কোনও খাঁচায় খরগোশ, কোনওটায় গিনিপিগ ইত্যাদি। সেজন্যেই ঘরটাতে গন্ধ।.
9 তোমাকে আর স্যারের ভুল ধরতে হবে না। নিজের চরকায় তেল দাও। নাও, এবার নামগুলো লিখে নাও। আর শোনো, আগের মতন ইঁদুরের ব্রেন সেল হলেই ভালো। তোমাদের ওসব খরগোশ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। ছেলেটা আর আমিষ খেতে পারছে না! সেরকমটা হলে কিন্তু চলবে না। সবার মনে সন্দেহের সৃষ্টি হবে।.
10 রাস্তার ডানদিকে কোশি নদীর ধার ঘেঁষে পরপর অনেকগুলো রিসর্টই রয়েছে, কিন্তু কোনওটাই ওদের পকেটের মাপের নয়। তবুও বিক্রম প্রত্যেকটার রিসেপশনে ঢুকে ঢুকে জিজ্ঞাসা করছিল, যদি অফ সিজন বলে কিছু ছাড়-টাড় পাওয়া যায়। ছাড় ছিলও কয়েকটাতে। কিন্তু ছাড়ের পরে যে অঙ্কটা থাকছিল সেও ওদের সাধ্যের বাইরে।.
11 কর্নেল নেগিকে অবশ্য আশেপাশে কোথাওই দেখা গেল না। বিক্রমও আর ডাকাডাকির চেষ্টা করেনি। হয়তো বিশ্রাম নিচ্ছেন ভদ্রলোক। একাই বাংলোর চারদিকে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলে যাচ্ছিল সে। অদ্ভুত নীল আকাশ, অনেক ওপরে উড়তে থাকা নিঃসঙ্গ চিল, চারদিকের ঝিম ধরা নির্জনতা তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলছিল আস্তে আস্তে।.
12 উনিই দরজায় টোকা দিয়ে ডেকেছিলেন খেতে, সাড়ে আটটা নাগাদ। তখন লক্ষ করেনি, এখন বিক্রমের চোখে পড়ল ভদ্রলোকের কপালে, গালে গভীর কয়েকটা কাটা দাগ। সবথেকে বড়ো দাগটা বাঁ-কানের তলা দিয়ে নেমে গলা বেয়ে শার্টের কলারের আড়ালে ঢুকে গেছে। যুদ্ধক্ষত। চোখ সরিয়ে নিতে নিতে মনে মনে ভাবে বিক্রম।.
13 বিক্রম কোনও উত্তর দেয় না। শ্যাওলামাখা নুড়িবিছানো আগাছাঢাকা পথ মাড়িয়ে সে তখন যাচ্ছিল পালিশহীন কাঠের দরজাটার দিকে। তার চোয়াল শক্ত, কপালে ভাঁজ। অনেক কিছুই চোখে পড়ছিল তার। দরজার গায়ে বসানো পেতলের গুলগুলো, অযত্নে কালচে। ছাদের টালি খসে গেছে অনেক জায়গায়। বুগেনভিলিয়ার শুকনো কঙ্কাল ঝুলছে ভাঙা টালির ওপর।.
14 হাসপাতালে যেতেই কাকা ওটা কোথায় আছে জানতে চাইলেন। মিথ্যা বললাম যে লকারে রাখা আছে। কাকা শান্তিতে চোখ বুজলেন। বললেন, ওনার সব সম্পত্তির মালিক আমি। কিন্তু এই বাক্স তাওয়াং মনেস্ট্রির সম্পত্তি। ওখানে যে প্রধান লামা রয়েছেন, তার হাতে ঐ বাক্স তুলে দিলেই আমার দায়িত্ব শেষ। সেদিন রাতেই কাকা মারা যান।.
15 বুঝতে পারি, কেউ ঐ বাক্সের খোঁজ করছিল। ভেবেছিলাম, কাকার শোক-কাজ মিটে গেলেই রেখে আসব ওটা। কী আছে জানতাম না। এর মধ্যেই একটা ফোন আসে। এক ভদ্রলোক মিঃ গুপ্তা কাকার রেফারেন্স দিয়ে একটা জিনিস কিনতে চায়। কাকার কাছে নাকি একটা বহু পুরনো পুঁথি ও বাতিদান ছিল। আমি এ-ব্যাপারে কিছু জানি না বলেছি।.
16 এই মুহূর্তে উনি দিল্লিতে রয়েছেন বলে খবর আছে। প্রমাণ নেই বলে ধরতে পারব না। ফোনের টাওয়ার লোকেশন বলছে কাল উনি ট্যাংরায় ছিলেন। আর মিঃ গুপ্তা কলকাতার একজন কিউরিও ডিলার। তবে ঐ খুংসু লামার কোনও খবর পাওয়া গেল না। আর যে একটা আননোন নম্বর থেকে থ্রেট আসছিল, সেটা কোনও লোকাল ক্রিমিনালের দলের।.
17 বিকেলে ওরা ভালুকপঙ পৌঁছে দেখে বৃষ্টিতে পথ এমনিই বন্ধ। প্রচুর টুরিস্ট আটকে গেছে। হোটেল নেই বললেই চলে। সকালেই অয়ন অফিসে বলে দিয়েছিল আসাম গভর্নমেন্টের গেস্ট হাউসে ওর জন্য দুটো রুম রাখতে। জিয়া-ভরালি নদীর তীরে একটা টিলার উপর খুব সুন্দর এই গেস্ট হাউসটা। ওরা একটা ডুপ্লেক্স কটেজ পেয়েছিল।.
18 এই বাতিদান তার চেয়েও পুরনো। ও যে জিনিসটা ওখানেই হস্তগত করতে চাইবে জানতাম। তাই ইচ্ছা করে চিনাবাজার ঘুরে একটা পিতলের বাতিদান কিনেছিলাম। ওটাই সুটকেসে রেখেছিলাম। স্ক্যানিং-এ মেটালটা কী ওরা বোঝেনি। ওদের বলা ছিল এমন কিছু যে লাগেজে থাকবে সেটা আলাদা করে রাখতে। ওরা আমার সুটকেস ওখানেই সরিয়ে ফেলেছিল।.
19 কিছুক্ষণ পরেই পৌঁছে যায় সেলা পাশে। ১৩,০০০ ফিট উচ্চতায় মেঘে ঢাকা সেলা পাশ ও সেলা লেক দেখে দিঠি অভিভূত। ঠাণ্ডা হওয়ায় শরীরের খোলা অংশ কেটে যাচ্ছিল। বমডিলা থেকে কেনা জ্যাকেট আর মাফলার, টুপিতেও ঠাণ্ডা আটকানো যাচ্ছিল না। প্রিমুলা ফুলের কার্পেট আর সবুজ ঘাস-জমি পার করে সবাই নেমে গেছিল লেকের ধারে।.
20 তিনজন আগন্তুকের একজন সেই প্লেনের লোকটা। অয়ন সবাইকে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বলেছে। ওদের একটাই দাবী, ঐ জিনিসদুটো ওদের চাই। অয়ন বলল যে তাদের কাছে ঐ জিনিস নেই। কেউ মানতে রাজি নয়। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে সবাইকে নামিয়ে ওদের সবার ব্যাগ চেক করেও যখন ওরা কিছু পেল না হতাশ হয়ে সু-তাংকে ফোন করল লোকটা।.
21 বিকেল বিকেল সবাই তাওয়াং পৌঁছল। অয়নের অফিস থেকে গভর্নমেন্ট গেস্ট হাউস বুক করে দিয়েছিল। সবাই সেখানেই উঠল। আগেরবারও অয়ন এখানেই উঠেছিল। ম্যানেজার ওর বন্ধু হয়ে গেছিল। এবার অয়ন আগেই ফোন করে দিয়েছিল আসছে বলে। বেশ রাজকীয় ব্যবস্থা তাই সবার জন্য। অয়ন পৌঁছেই থানায় যোগাযোগ করে রাস্তার ঘটনা জানিয়ে দিয়েছিল।.
22 পদ্মসম্ভবের পরেই মর্যাদায় পেমা লিংপার স্থান বলে মানা হয়। তাওয়াং মঠের প্রধান সন্ন্যাসী বা চিপার ঘরেই সযত্নে রাখা থাকত দ্বাদশ শতকে তৈরি মূর্তিটি। ৩১শে মে দরজা ভেঙে প্রাক্তন জামাই গাওয়াং ঐ তেরতন চুরি করে প্রেমিকা গাকের সঙ্গে দিল্লি পালিয়ে গেছিল। দিল্লি পুলিশ ওকে ধরে মূর্তি উদ্ধার করে।.
23 বহু হাত ঘুরে ওটা হিমালয়ের এক প্রাচীন মঠে ছিল। চিপা একসময় সেই মঠে ছিলেন। উনি দেখেছেন জিনিসদুটো। তবে ঐ মঠের প্রধান বুঝতে পেরেছিলেন যে জিনিসদুটো ওখানে সুরক্ষিত নয়। প্রথমে ধর্মশালার মঠে পাঠিয়েছিলেন উনি। লিংপা বুঝতে পেরেছিলেন, ওখানেও ও-দুটো সুরক্ষিত নয়। তাই এখানে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন।.
24 কয়েক মাস আগে জলার বাসিন্দাদের জীবনে যে বিপদ ঘনিয়েছিল, তাতে বিপত্তারণ হিসেবে অবতীর্ণ বৃদ্ধ স্টেগোসরাসটি ঠিক কী করেছিল, তা কারও মনে থাকে না বলে লগকে কোনওরকম বেশি খাতির করার কথাটাও তাদের খেয়াল হয় না। তবে লগ নিজে সেই ঘটনাবহুল দিনটা, আর তারপরের সাঙ্ঘাতিক রাতটা কোনও দিন ভুলতে পারবে না।.
25 টিলাটায় যে শান্তিতে আলোচনা করা যাবে, সেটা লগ নিশ্চিতভাবে জানত। ট্রাইসেরাটপসদের পুরনো আড্ডার কাছে বলে ওই জায়গায় সচরাচর অন্য জন্তুরা যেতে চায় না। লগ আর কিঁ ওখানে যেতে পারে। কারণ, ওদের চ্যালেঞ্জ করার ঝুঁকি ইদানিং কেউ নিতে চায় না। কয়েক মাস আগে কী হয়েছিল সেটা মনে থাকুক, বা না থাকুক।.
26 তাই নিশ্চিন্ত মনে জানালার রডে মাথাটা হেলিয়ে চোখ বন্ধ করলাম। সেই কোন সকালে বেরিয়েছি। আটটা পাঁচের ট্রেন ধরে অফিসে আসা। ফেরার সময়ে সাতটা বারো ধরি প্রতিদিন। ওভারটাইম হলে দেরি হয়। হালকা দুলুনিতে তন্দ্রাভাবটা গ্রাস করল সহজেই। চোখের সামনে ভেসে উঠল টেবিলভর্তি ফাইল। চোখ একবার কম্পিউটারে আর একবার ফাইলে।.
27 একটা করে টিক দিচ্ছি সংখ্যাগুলোর গায়ে। আচমকা কম্পিউটারের স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটা সতর্কীকরণ বার্তা। ভাইরাস ঢুকেছে। কিন্তু এমন হওয়ার কথা নয়। সবসময়ে অ্যান্টিভাইরাস আপডেট করা থাকে মেশিনে। তাহলে! তারপর আচমকা স্ক্রিনটা কালো হয়ে গেল। এরপর দু-একটা সুইচ টিপতে একটা একটা করে ইংরাজি সংখ্যা লাফাতে লাগল।.
28 উঁচুনিচু জমিতে ঠোক্কর খেতে খেতে। আস্তে আস্তে ফিরে পাচ্ছিলাম দৃষ্টিশক্তি। কিন্তু সেটা খুবই ক্ষীণ। বুনো মোষেদের গা থেকে বেরনো একটা বোঁটকা গন্ধে ভরে আছে জায়গাটা। যত ভিতরে ঢুকছি তত যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে। গুমোট আবহাওয়াটা অসহ্য হয়ে উঠছে ক্রমশ। জ্বলজ্বল করছে শুধু মোষেদের সবুজ চোখগুলি।.
29 আমাদের বসের বস শৈলেন্দর ধনোরিয়া রেগেমেগে এসে হাজির হলেন আমাদের সাইট অফিসে। যা নয় তাই বলে গালাগালি দিলেন সমস্ত কর্মচারীকে। নির্দেশ দিলেন আগামী তিনদিনের মধ্যে যেভাবেই হোক আবার তৈরি করতে হবে প্রজেক্টের ব্লু-প্রিন্ট। ওটা না দেখাতে পারলে বিদেশি লগ্নি আসবে না। ফলে প্রজেক্টটাই বাতিল হয়ে যাবে।.
30 আর সেটা করেন অত্যন্ত দম্ভের সঙ্গে। এই ব্যাপারটাই প্রমথ একদম সহ্য করতে পারেন না। মনে মনে বিরক্ত হন। একটা সময়ে বিরক্তি চরমে পৌঁছায়। তখন প্রমথ মনে মনে শপথ নিয়ে ফেলেন, যে করেই হোক বিল্বর দর্প তিনি চূর্ণ করবেনই। কিন্তু অনেকদিন কেটে গেলেও সেই শপথ রক্ষার সুযোগ উনি আর পাচ্ছিলেন না।.
31 কাল রাতেই বাছাধনের বোলচাল আমি বন্ধ করে দেব। খালি লম্বা লম্বা বাত। তোকে শুধু একটা কাজ করতে হবে। আমার মোবাইলটায় অ্যালার্ম দিয়ে রাখবি। ঠিক রাত একটার সময় আমাকে ডেকে দিবি। আসলে আমার ঘুম খুব গভীর বুঝলি। ঐ অ্যালার্মের শব্দেও ভাঙে না। তুই একবার খালি আমাকে জাগিয়ে দে। তারপর যা করার আমি করব।.
32 ওঁকে হাতেনাতে ধরার জন্য বিল্ব তাই দরজা খুলে দ্রুত দোতলায় পৌঁছে গেলেন। দেখলেন, প্রমথ ইতিমধ্যে নিজের ঘরে ঢুকে দরজায় খিল এঁটে দিয়েছে। এই রাতবিরেতে দরজা ধাক্কাধাক্কির কোনও মানে হয় না। ও তো দরজা খুলবেই না, উপরন্তু পাশের লজের লোক জেগে যেতে পারে। তাই বিল্ব ঠিক করলেন, বন্ধুকে যা বলার কাল সকালেই বলবেন।.
33 অয়স জঙ্গলের এইদিকটায় আগে কখনও আসেনি। ঘন বনের ভিতর থেকে সূর্যকে দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে সন্ধ্যা হতে বেশি দেরি নেই। সকালে গ্রামের যুবকরা প্রতিদিনের মতো একত্রে শিকারে বেরিয়েছিল। অয়স অন্যদের থেকে বয়সে ছোটো, শক্তিও কম। তাই একা কোথাও যাওয়ার কথা ওর নয়। কিন্তু ভল্লের জন্যই এখানে আসতে হয়েছে।.
34 জঙ্গলে হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে ঢুকেছিল ওরা পাঁচজন। সকলেরই হাতে ছিল বল্লম। কর্মকার অনেক যত্ন নিয়ে এই বল্লমগুলো বানায়। কর্মকার এই গ্রামের লোক নয়। কোথা থেকে এসেছে কেউ জানে না। অনেক বছর আগে সওদাগরদের সঙ্গে একবার গ্রামে এসেছিল, তারপর আর ফিরে যায়নি। বল্লমের ফলা তৈরি করতে দুটো ধাতু লাগে।.
35 অনেকেই তাকে কারণটা জিজ্ঞাসা করে, কর্মকার কোনও উত্তর দেয় না। খালি অয়সকে তো খুব ভালোবাসে, ওকে একবার বলেছিল যে তলোয়ার তো শিকারে লাগে না, চাষেও না। শুধু মানুষ মারার কাজে যে জিনিস লাগে তা বানানোর রুচি কর্মকারের নেই। ভল্লের এই তলোয়ারটাও বল্লমের ফলায় ব্যবহৃত একই সঙ্কর ধাতু দিয়েই তৈরি।.
36 এর মধ্যে অন্ধকার নেমে এসেছে। পথ চেনাটা সমস্যা নয়, নদীর ধার ধরে গেলেই হল। কিন্তু অন্ধকারে হিংস্র জন্তু বেরোতে পারে, একটা অস্ত্র দরকার। ফলাটা লতা দিয়ে বল্লমের আগায় বাঁধার চেষ্টা করল অয়স। কিছুতেই পেরে উঠল না। কী মনে করে পাথরের টুকরোটা হাতে নিল। বেশ ভারী। সেটাকেই বল্লমের আগায় বেঁধে নিল।.
37 রাত হয়ে এসেছে। আজ পূর্ণিমা বলে তবুও বাঁচোয়া। তাও বুক ঢিপঢিপ করছে অয়সের। সাবধানে যতটা সম্ভব নিঃশব্দে হাঁটার চেষ্টা করছিল। এমন সময়ে একটা খসখস আওয়াজ এল ডানদিক থেকে। ঘুরে তাকিয়ে রক্ত হিম হয়ে গেল অয়সের। সামনেই বিরাট একটা ভাল্লুক। ভয়ে চারদিকে চোখ ফেরাল অয়স। সামনেই একটা গাছ যার একটা ডাল খুব নিচে।.
38 কিছুদিন ধরে সমুদ্রে এইসব দেখতে দেখতেই কেটে গেল। তারপর একদিন দেখল উলটোদিক থেকে আসছে এক জাহাজ। কৌতূহলী শাফিক নিজের মাল্লাদের বলে, ওই অচেনা নাওয়ের কাছে ওর জাহাজকে নিয়ে যেতে। কাছাকাছি আসতে না আসতেই সেই নাওয়ের ভেতর থেকে ভেসে আসে মানুষের কান্নার শব্দ, কষ্টের গোঙানির শব্দ। সেই শব্দ শুনেই অবাক হয় শাফিক।.
39 খুব খুশি হল। মুখে তা প্রকাশ না করে দুটো জাহাজ বদলাবদলি করে নিল। শাফিকও খুব খুশি। জাহাজসুদ্ধু সব পণ্য ওই দুষ্টু দাসব্যবসায়ীকে দিয়ে অন্তত এতগুলো লোকের মুক্তি তো ও কিনতে পেরেছে! প্রথমেই সবার শেকল খুলে দেবার জন্য বলে দিয়ে তারপর জনে জনে নামধাম জেনে নিয়ে কাপ্তেনকে বলল, চলো অমুক দেশ।.
40 বেজায় হিংসুটে মন্ত্রী ভেবেছিল, এই রাজার তো ছেলেটেলে নেই। তাই রাজকন্যাকে বিয়ে করে সেই রাজা হয়ে বসবে। সেটা তো হলই না, উলটে কোন এক বিদেশি উটকো লোক নাকি রাজকন্যাকে বিয়ে-টিয়ে করে বসে আছে। মন্ত্রীটা আপ্যায়নের ছল করে নৌকোর একেবারে ধারে নিয়ে যায় শাফিককে। তারপর ঠেলে ফেলে দেয় জলে।.
41 শোনা যায় হাততালির শব্দ। ইংরাজিতে বিভিন্নরকম স্বস্তিমূলক মন্তব্য কানে আসে। রিসার্চ রুমের একশো বাইশজন এইমুহূর্তে বেজায় আনন্দিত। আজ, ২০৩০ সালের ৭ই জুন সার্থক হয়েছে বৈজ্ঞানিকদের অক্লান্ত পরিশ্রম। আবিষ্কার হয়েছে টাইম ট্রাভেলিং মেশিনের। সৃষ্টি হয়েছে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের।.
42 উই নো, ওয়ার্ম হোলের কাজ স্পেস-টাইমে দুটো আলাদা সময়কে লিঙ্ক করা। সো আমাদের টার্গেট ছিল এমন একটা মেশিন তৈরি করবার যেটা রিঙ্কেলস আইডেন্টিফাই করতে পারে। কারণ, ছিদ্র অথবা রিঙ্কেলস রয়েছে সব জায়গায়, এমনকি টাইমেও। কোয়ান্টাম ফোমের অন্তর্ভুক্ত এই রিঙ্কেলসগুলোই হল একেকটা ওয়ার্ম হোল।.
43 নিজের থিসিস নিয়ে আলোচনা করে। শনের মতামত চায়। শনও নিজের সাধ্যমত সাহায্য করতে থাকে। কী এক কারণে সুস্ময়কে পাশের ঘরে যেতে হয় কিছুক্ষণের জন্য। শন তৈরিই ছিল। হয়তো অনেকদিন ধরে এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিল সে। ইন্ডিয়ানটা যে ঘরের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সর্বক্ষণ অন রাখতে এখনও অভ্যস্ত হয়নি, খুব ভালো করেই জানত শন।.
44 এরপর যা হওয়ার তাই হয়। শন ওয়াইল্ডকে টাইম ট্র্যাভেলের প্রোজেক্ট ইনচার্জ ডিক্লেয়ার করা হয়। আর সুস্ময়কে জুনিয়র সায়েন্টিস্ট। কাজ চলতে থাকে শনের তদারকিতে। একবছরের মধ্যেই নিজেকে গুছিয়ে নেয় সুস্ময়। এই শহরে প্রাপ্য সম্মান কেউ দেয় না। তা ছিনিয়ে নিতে হয়। না হলে বশ্যতা স্বীকার করে চলতে হয়।.
45 ঘরের ভিতরে আলো থাকায় সেখানকার দৃশ্য দেখতে কোনও অসুবিধা হয় না। লবিতে সোফায় বসা নিজেকে ও শনকে কাগজপত্র নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখে সুস্ময়। এক অদ্ভুত অনুভূতি হতে থাকে ওর। এইরকম অভিজ্ঞতা হবে কোনওদিনও ভাবেনি সে। আর কিছুক্ষণ পরই অতীতের সুস্ময়ের ভিতরের ঘরে উঠে যাওয়ার কথা। ভবিষ্যতের সুস্ময় অপেক্ষা করে চলে।.
46 সুস্ময় উঠে গেলেই শন দ্রুত হাতে ওর রিসার্চ ওয়ার্কের ছবি তুলতে শুরু করে। অন্যের পরিশ্রম চুরি করতে থাকে নির্দ্বিধায়। ঘটনাটা নিজের চোখের সামনে ঘটতে দেখে সুস্ময়ের অসহ্য লাগে। মাথা ঠিক রাখতে পারে না সে। নিজের সৃষ্টি এতদিন অন্যের নামে বিকিয়েছে এবং তা চুপচাপ মেনেও নিয়েছিল সে। কিন্তু আর না।.
47 সাক্ষী থাকবে তার ফ্যামিলি। নিঃসন্দেহে স্ট্রং অ্যালিবাই। আর ভবিষ্যতের সুস্ময় তো ফিরে যাবে নিজের সময়ে এবং মার্ডার ওয়েপন পেনসিল নাইফটাও সুস্ময় নিজের সঙ্গে রাখা শুরু করেছে বছর তিনেক হল। সুতরাং আমেরিকান পুলিশ পরেরদিন এখানে সেটার কোনও হদিশ পাবে না। পারফেক্ট মার্ডার করবার নেশা পেয়ে বসে ওকে।.
48 সেখানে তখন খাবারদাবারের গন্ধে চারদিক মাতোয়ারা, আর খেতে আসা লোকেদের জটলা। সবাই পরিচিতদের সঙ্গে কথা, হাসি, কুশল বিনিময় করছে ঠিক কথা, কিন্তু তারই ভিতর বাজপাখির চোখে মেপে চলেছে কোন ব্যাচে কোন পদ পরিবেশন চলছে, আর কনুই দিয়ে পরিবারকে ঠেলে ঠেলে সম্ভাব্য খালি টেবিলের দিকে নিয়ে চলেছে।.
49 বহুকাল আগে ঠিক এখানেই জন্মেছিলাম আমি। ছোটোবেলা এই পার্কে কেটেছে, এখানেই খেলা করতাম। কত কত যেন বন্ধুরা ছিল, সদাসর্বদা সঙ্গে সঙ্গে থাকত। বিকেল হলেই হৈ হৈ করে খেলা আর খেলা শুধু। কত আনন্দ, কত মজাতে না কাটত। ভাবতেই যেন আবার নিমেষে সেই আনন্দ পেলাম। এক নিমেষেই আমি যেন সেই শৈশবে ফিরে গেলাম।.
50 সকালে ড্রইং-স্যারের কাছে বকুনি খেয়ে মনখারাপটা আবার ফিরে আসছিল। এদিকে রান্নাঘর থেকে মাটনের গন্ধ ভেসে আসছে। মনখারাপটা চেপে বসলে দুপুরের খাওয়াটাও মাঠে মারা যাবে। তার ওপর আবার ঠিক করে ফেলেছে জিনসটা শালুপিসির ছেলেকে দিয়ে দেবে। তার মানে বাবাকে বলতে হবে আরেকটা প্যান্ট কেনার কথা।.
51 রাত শেষে আহির ভৈরব শুনে বিদায় নেবার আগে বললেন, জুঁই, গোলাপ আর হাসনুহানা ফুলদের গন্ধ ওঁর খুব প্রিয়। ফুলগুলো আশেপাশে এখন না থাকলেও উনি ওদের কথা ভাবলেই অনেক দূর থেকেও এই গন্ধ চলে আসে ওঁর কাছে। দুটো চোখ হারালে যেমন অন্য অনুভূতি প্রবল হয়ে পুষিয়ে দেয়, সেইরকম শরীর হারিয়ে অশরীরী হবার কিছু সুবিধেও আছে।.
52 ভারতবর্ষের সেরা ম্যাজিশিয়নের তকমা পাওয়া তো হয়েই গেছে। তার তুলনা শুরু হয়ে গেছে হুডিনি, ব্ল্যাকস্টোনদের সঙ্গেও। ভারতবর্ষের মতো গরিব দেশে থেকেও যে অনেক কম খরচে এত উন্নতমানের ম্যাজিক দেখানো যায় সেই ধারণাটা বিশ্ববাসীর মনে প্রথম প্রবর্তন করে অমরেশদাই। এরকম সময় আমি যোগ দিই তার দলে ইল্যুশন ডিজাইনার হিসেবে।.
53 আমার কাজ ছিল অমরেশদার প্রতিটি ইল্যুশন বা ম্যাজিক ডিজাইন করা। কী কী ম্যাজিক দেখানো হবে, ঠিক কীভাবে ম্যাজিকগুলো দেখানো হবে, কী কী প্রপস ব্যবহার করা হবে, কোন পজিশন থেকে ঠিক কতটা পরিমাণ আলো ফেলতে হবে, অমরেশদার সঙ্গে আলোচনা করে এইসব ঠিক করা আর শোয়ের সময় মঞ্চের পিছনে থেকে এসব তদারকি করাই ছিল আমার কাজ।.
54 সে আগে ছিল আমাদেরই দলের একজন জুনিয়র আর্টিস্ট। টানা লম্বা শোতে অমরেশদা মাঝে মাঝে বিরতি নিত। সেই সময়টাতে স্টপ গ্যাপ হিসেবে টুকটাক ম্যাজিক দেখাত রুদ্র। কয়েকজন পয়সাওয়ালা স্পনসরদের পৃষ্ঠপোষকতায় আর নিত্যনতুন মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিতে সে বেশ সহজেই অল্প দিনের মধ্যেই নাম করে ফেলল।.
55 হুডিনির অ্যাক্টটাতে একটু রদবদল করা হল। তিনি কাঠের প্যাকিং বক্স ব্যবহার করেছিলেন। আমরা ব্যাপারটাকে আরেকটু নাটকীয় করার জন্যে ঠিক করলাম, প্যাকিং বক্সের বদলে কফিন ব্যবহার করা হবে। হুডিনির মতোই অমরেশদার হাতেও হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে কফিনটাতে। তারপরে কফিনটা তালা মেরে সীল করে দেওয়া হবে।.
56 শ্বাসপ্রশ্বাস নেবার জন্যে আর সহজে জলের তলায় ডোবানোর জন্যে কফিনে কয়েকটা ছোটো ছোটো ছিদ্র থাকবে। সেই ছিদ্র দিয়ে অমরেশদার সঙ্গে শেষমুহূর্ত পর্যন্ত কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়া হবে। জলে ডোবানোর আগে কফিনটা একটা লোহার শিকল দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দেওয়া হবে। সেই শিকলে লাগানো থাকবে তিন-তিনটে তালা।.
57 রূপা ছুটে এলেন পাশের ঘরে। খাটের উপর পুপুর দুই দিদি গভীর ঘুমে মগ্ন। পুপু বসে আছে পশ্চিমের খোলা জানালার রোয়াকের উপর। জানালার রোয়াকে পুপুর পাশে বসে আছে এক সুবিশাল ধূসর বর্ণের বাজ বা ঈগল জাতীয় পাখি। পাখিটার শরীর থেকে এক অদ্ভুত আলো বের হচ্ছে। এরকম ধরনের পাখি এই পৃথিবীতে কোনও ছবিতেও তিনি দেখেননি।.
58 টুকলু মাথা নিচু করে নিজের বিছানাতে শুয়ে পড়ল। তার খুব কান্না পেল। সে কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল তা সে নিজেও বোঝেনি। যখন ঘুম ভাঙল, দেখল সে একটা ম্যাপলগাছের নিচে শুয়ে। সেই গাছের পাতার রং অনেকটা হলুদ, সবুজ আর লাল রঙে মেশানো অদ্ভুত একটা রং। যেন ছবির মতো। এ সে কোন দেশে এসে পড়ল।.
59 খানিকটা গাছবাড়ির মতো। গাছের খানিকটা কেটে বাড়ির দরজা বানানো হয়েছে। এরকম বাড়ি সিনেমাতে দেখেছে। তার খুব খিদে পেয়ে গেছিল। কাঁদলে যে এত ক্লান্ত লাগে তা জানা ছিল না। বাড়িটা দেখে সে নিশ্চিন্ত হল। যদি কোনও মানুষের সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে ভালো হত। তার কাছে জল তো পাওয়া যেত।.
60 তিনি সায়েন্টিস্ট ছিলেন। দিদান পিউকে বলেছেন দাদু একবার কাজে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। সকলেই একটু একটু করে সেই দুঃখ মেনে নিয়েছে। মানুষ তো চিরদিনের জন্যে হারিয়ে যেতে পারে না। সকলে ধরেই নিয়েছে যে তিনি আর হয়তো বেঁচে নেই। দিদান কিন্তু এখনও মনে মনে বিশ্বাস করেন যে দাদু একদিন ফিরে আসবেন।.
61 কিন্তু আমাদের গল্প শুরু হচ্ছে দুই দলকে নিয়ে। আমাদের পৃথিবীতে নানাধরনের লোক থাকে। তাদের কেউ বেঁটে, কেউ মোটা, কারও বুদ্ধি বেশি, কারও আবার কম। কিন্তু কয়েকজন এরকম লোকও থাকে যাদের কাছে কিছু বিশেষ ধরনের শক্তি থাকে। এমন কয়েকজনকে নিয়েই আমাদের গল্প। এই বিশেষ শক্তিসম্পন্ন লোকেরা একসময় দুই দলে ভাগ হয়ে গেল।.
62 এক দলের নাম একসুসিয়াস আর অন্যদলের নাম এরেনিয়াস। এরেনিয়াস দলের লোকেরা মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাইত। কিন্তু একসুসিয়াসদের তা পছন্দ ছিল না। তারা পৃথিবীর অধিপতি হতে চাইত। কিন্তু চাইলেই তো আর হয় না। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষদের সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে জনাকয়েক একসুসিয়াস কিছুই করতে পারবে না।.
63 কিন্তু কিছুতেই তারা এই শক্তি পেল না। প্রকৃতির নিয়মে এই শক্তি যাদের থাকত, তারা খুব ভালো লোক ছিলেন। এরেনিয়াসের অন্য কয়েকজন একসুসিয়াসদের সঙ্গে চলে গেলেও প্রধান শক্তিশালী যারা তাদের একসুসিয়াসরা দলে টানতে পারল না। বরং কয়েকজন একসুসিয়াস নিজের ভুল বুঝতে পেরে সাহায্য করতে লাগল এরেনিয়াসদের।.
64 সামনাসামনি যুদ্ধে তারা কিছুই করতে পারবে না। হাজার হাজার বছর ধরে এই যুদ্ধ চলল। অবশেষে একদিন এমন এল যে এরেনিয়াসদের মধ্যে শুধু একজনের কাছেই এই শক্তি রয়ে গেল সময়কে নিয়ন্ত্রণ করার। এদিকে একসুসিয়াসরা চারদিক থেকে তার ওপর আক্রমণ করার চেষ্টা করছে। এরেনিয়াসদের দলে বাকি মাত্র তিনজন।.
65 সেই একজন এরেনিয়াস আবার এক সঙ্গে চারটে শক্তির অধিকারী ছিলেন। তাই একমাত্র তাকে বশ করে নিতে পারলেই একসুসিয়াসরা জিতে যাবে। এত হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা সাবধানতা জলে যাবে। একসুসিয়াসরা তাদের শক্তির জোরে পৃথিবীতে রাজত্ব করবে। তাদের না আছে দয়ামায়া, না আছে ভালোবাসা। কোনও পাখি, পশু, জঙ্গল বেঁচে থাকবে না।.
66 ছোটোবেলায় যখন বাবাকে বাগানে পাখিদের সঙ্গে আপন মনে কথা বলতে শুনতেন, তখন বিনয় জানতেন না তার বাবা শুধুমাত্র একজন সামান্য মানুষ বা কোয়ান্টাম ফিজিক্সের অধ্যাপক নন, এরেনিয়াসদের একজন। তিনি পশুপাখিদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কিন্তু এরেনিয়াসের সন্তান হলেই যে তার মধ্যে বিশেষ গুণ থাকবে সেরকম বাধ্যবাধকতা নেই।.
67 ভবিষ্যত আর অতীতে যদি কোনও লোক কব্জিতে এই যন্ত্র পরে থাকে, টাইমলাইন অ্যাডজাস্ট করলে মানুষ সশরীরে টেলিপোর্ট হয়ে যাবে অতীতে। বাবা যদি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে চায় তাহলে ভবিষ্যত থেকে ছেলে সশরীরে তার কাছে চলে আসতে পারবে। কিন্তু যে টেলিপোর্ট হবে যন্ত্র শুধু তার হাতে থাকবে, অপারেট করতে হবে অন্যজনকে।.
68 কাজটা বলার আগে একটু কাজের কারণটা বলে নিই। তোমরা সকলেই এরেনিয়াস আর একসুসিয়াসদের কথা জান। পিউ জানত না, ওকে আমি সব বলে দিয়েছি। এখন কথা হচ্ছে, একসুসিয়াসরা তাদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ঢের ক্ষতি করছে। বস্তু পরিবর্তনের শক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গল কে জঙ্গল সরিয়ে সেখানে কংক্রিটের মহল বসাচ্ছে।.
69 কিন্তু যে সূত্র লুকিয়ে রেখেছিল সে জানত যে সেখান থেকে এই ছবি নিয়ে আসা চলবে না। তাই সে বলেছে, বন্ধু চেনে প্রথম দেখায়, জাগবে উঠে স্মৃতির রেখায়। মানে, যদি এই ছবির প্রাণীগুলোকে আমরা বন্ধু বলে মনে করি তাহলে সহজেই স্মৃতির ওপর নির্ভর করে তাদের রেখায় জাগিয়ে তুলব, মানে তাদের ছবি আঁকতে পারব।.
70 এগারো বছর বয়স হলে তারা জানতে পারল যে সুপু, অন্তু আর পিলু তিনজনেরই বিশেষ কয়েকটা শক্তি আছে। মানে, তারা ছিল এরেনিয়াস। পিলু পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণীর সঙ্গে কথা বলতে পারত। এমনকি যে প্রাণীরা আসলে কল্পনার জগতে থাকে তাদের নিয়ে আসতে পারত পৃথিবীতে। তাদের সঙ্গে মানসিক যোগাযোগ করতে পারত।.
71 তার স্ত্রী, ছেলে কেউ জানত না এই কথা। কী ভীষণ সেই সিদ্ধান্ত! কিন্তু সুপু বন্ধুকে ফিরিয়ে আনার জন্যে সবকিছু করতে রাজি। সুপু গাছ হয়ে সময় হলে সেই মেয়েটির সঙ্গে মানসিক যোগাযোগ স্থাপন করে পিলুকে ঠিক সময়ের কথা জানিয়ে দেবে। সেইমতো পিলু গিয়ে অন্তুকে ফিরিয়ে আনার জন্যে ব্যবস্থা নেবে।.
72 অভয়ারণ্যের মূল ফটকটা পাকা রাস্তার ওপরে হলেও গেস্ট হাউসটা রাস্তা থেকে চোদ্দ কিলোমিটার ভেতরে। আগে এই অঞ্চলে এলেও কখনও মোহিনী অভয়ারণ্যে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এই প্রথম যাব। সঙ্গের তিন সাথীর প্রথম এই অঞ্চলে আসা। জানতাম, অভয়ারণ্যের গেস্ট হাউসে রান্নার লোক থাকলেও খাবারের সব উপকরণ সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়।.
73 সেই প্রভুভক্ত কুকুরটার নাম ছিল হাচিকো। ১৯২৩ সালের শিবুয়া রেইড রোড স্টেশনে ওকে পেয়েছিলেন প্রফেসর ইসাবুরই। এর একবছর পর ইসাবুরইর দেহাবসান হয়। ১৯২৪ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত হাচিকো ওই স্টেশনে প্রফেসরের জন্য অপেক্ষা করেছিল। ওই স্টেশনের ভেন্ডাররা ওর দেখাশোনা করত। সংবাদপত্রে এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল।.
74 বাচ্চার মা-বাবার ধারণা, বামুনির দেওয়া ঔষধ খেয়েই বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে। আর তারা যখন গ্রামের সবাইকে এ ব্যাপারে জানায় তখন তাতে বেশ কয়েকজন এই বলে ইন্ধন যোগায় যে বামুনিকে শ্মশানে শবসাধনা সহ তন্ত্রমন্ত্র, তুকতাক ইত্যাদি করতে দেখা যায়। আর এসমস্ত সাধনায় যে বাচ্চার বলি আবশ্যক সে বিষয়ে প্রায় সবাই নিশ্চিত।.
75 পঞ্চমুণ্ডির আসনটিকে ব্রাহ্মণ প্রতিষ্ঠা করেন সেই লাশের পিঠে। তারপর কৌপীন পরিহিত অবস্থায় তার উপর বসে সাধনা শুরু করেন। এ সাধনা মৃত্যুর সাধনা। সমস্ত জীবনের তন্ত্র থেকে প্রাপ্ত সমস্ত শক্তি দিয়ে এই সাধনা। এই সাধনা কোনওদিন মানুষের মঙ্গলের জন্য হতে পারে না। এই সাধনার একমাত্র লক্ষ্য মৃত্যু।.
76 আজকে যার মৃত্যু হয়েছে সেই কালকে অন্য কোথাও গিয়ে উপস্থিত হচ্ছে, তার সঙ্গে থাকছে একটি শালপাতার পুঁথি। একটা গল্প সে বলছে আর একটা করে মৃত্যু হচ্ছে। ব্যস, চলতেই থাকল। কাসমুদ্রম এবং আশেপাশের গ্রাম অল্পদিনেই জীবিত মানুষের শ্মশানে পরিণত হল। সবাই বেঁচে আছে। কিন্তু শুধুমাত্র ছায়াটিকে অবলম্বন করে।.
77 কিম্বা এরকম কোনও ঘটনার ফলে যদি কেউ অপদস্থ হয়েছে এ খবরও তাঁর কানে কোনওভাবে এসেছে তবুও ঘটেছে একই পরিণাম। আমাদের গ্রামের মফস্বলেও ঘটেছে এরকম অনেক ঘটনা। এবার কলকাতার পালা। কারণ কলকাতার মধ্যেও সেই আদিকাল থেকে ঘটে আসছে এরকম বহু মধ্যযুগীয় বর্বরতা। বোধহয় আমাদের পৌঁছাতেই একটু দেরি হল।.
78 আমরা বর্ধমানে ছোটোবেলায় অনেকদিন ছিলাম। জেঠুর ছেলেবেলার বন্ধুর ছেলে ছোটো নীলপুরে একটা জিম খুলেছে। কাল ছিল তার উদ্বোধন। আমি আর সোনাদি সেখানেই গেছিলাম। ওখান থেকে বেরিয়ে যখন গোলাপবাগের দিকে যাচ্ছি, আমার মনে হয়েছিল, ওমনিটা আমাদের জিমের ওখান থেকেই বেশ খানিকটা সময় ধরে ফলো করছে।.
79 যারাই বৃদ্ধকে কথা বলতে দেখেছে বোতলদের সঙ্গে, তাদেরকেই ভবিষ্যতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি! কিন্তু রিক্কি, জেঙ্ক আর সিলভা কেউই এই কিংসপোর্ট অঞ্চলের বাসিন্দা নয়। তারা এ অঞ্চলে নতুন এবং উদ্বাস্তু পরিবারের লোক যারা কিনা নিউ ইংল্যান্ডের জমকালো শহুরে জীবন আর শহুরে চৌহদ্দির বাইরে বাস করে।.
80 গ্রন্থিল বৃক্ষের কচি ডালপালার ফাঁকফোকর গলে আসা চাঁদের উজ্জ্বল আলোকছটায় ভেসে যাচ্ছে পাথুরে পথঘাট যা কিনা একদমই পছন্দ নয় তাদের, শুধুমাত্র কুসংস্কারের জন্যে। মনে মনে তারা বেশ ভয় পাচ্ছিল এই ভেবে যে, হয়তো লুকোনো স্বর্ণ-রৌপ্য ভান্ডারের ব্যাপারে বৃদ্ধের মুখ খোলানোর কাজটা ভদ্রগোছের নাও হতে পারে।.
81 উ সেওয়ের গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে তিনি সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, সে যেন সাদ্দেও গ্রামে তাঁর পরিবারের সাথেই থেকে যায়, আর কোথাও যাবার দরকার নেই তার। সেই সঙ্গে তিনি উ সেওকে আশ্বস্ত করলেন, যে কোনও অবস্থায় তিনি তাকে রক্ষা করবেন এবং তার ওপর হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে সাহায্য করবেন।.
82 এখন মানুষ যখন শিকারে যায় তখন কুকুর সবসময় তাঁদের সঙ্গে থাকে আর অন্য সকল পশুদের পায়ে লেগে থাকা তুং রিমবাইয়ের গন্ধ শুঁকে বহুদূর থেকে অতি সহজেই পশুদের অনুসরণ করতে সক্ষম হয়। এভাবেই কুকুর এখন মানুষকে পশু শিকারে সাহায্য করে। স্বাভাবিকভাবেই বনের অন্যান্য পশুদের দিন কাটে অনুতাপ করে।.
83 গাছ লাগায়। পিএস বলেছে, ওদের প্ল্যানেট নাকি পৃথিবীর মতো এত সুন্দর নয়। গাছপালা ওখানে সারভাইভ করতে পারে না। কাজু জানে, ওর দায়িত্ব পৃথিবীকে সুন্দর রাখা। আর পৃথিবী সুন্দর থাকলেই না সবাই ভালো থাকবে! তাই গাছে নিয়মিত জল দেয় কাজু। নিজের হাতে ওর ঘরের ডাস্টবিন পরিষ্কার করে। রাস্তাঘাট কক্ষনও নোংরা করে না।.
84 মনে আছে, ক্লাস ওয়ানে প্রথম হওয়ায় বইটা পুরস্কার পেয়েছিলাম স্কুলের অ্যানুয়াল ফাংশনে। রুশদেশের উপকথা। সেই থেকেই ভালো লাগার শুরু। রোজ খাওয়ার টেবিলে মায়ের মুখে পাতার পর পাতা শুনতে শুনতে প্রতিটা গল্প যেন আমার নিজের হয়ে ওঠে একসময়। ভীষণ ইচ্ছা হত বোকা ইভানের মতো চুল্লির তাকে শুয়ে ব্যাঙের ছাতা খাওয়ার।.
85 তবে সংগৃহীত হলেও দক্ষিণারঞ্জনের লেখনীর গুণে গল্পগুলো হয়ে উঠে শিশু-মনোরঞ্জক। গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বইয়ের ভূমিকা লিখেছিলেন। আরও একটি বই যা গল্পের আসরে স্বমহিমায় নিজের জায়গা করে নিয়েছিল তা হল ভারতের প্রাচীনতম গল্পসংগ্রহ জাতক।.
86 কথিত আছে, বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য সম্রাট অশোকের পুত্র মহেন্দ্র যখন সিংহলে গিয়েছিলেন তখন তার সঙ্গে ছিল এই জাতকের কাহিনিগুলো। জাতকের রচনাকৌশল মধ্যযুগীয় ইউরোপের অনেক রচনাতে গ্রহণ করা হয়েছিল। অবশ্য পথপরিক্রমায় মূল গল্প অনেক পরিবর্তিতও হয়েছে। জাতকে প্রায় সাড়ে পাঁচশো গল্প অন্তর্ভুক্ত আছে।.
87 এ গল্পটি সহ অসংখ্য শিক্ষণীয় ও মজার গল্প যিনি লিখেছেন তিনি গ্রীসের বিখ্যাত গল্পকার ঈশপ। ঈশপ ছিলেন মিশরের ফ্যারাও বাদশাহ আমাসিসের সময়কার লোক। সামস দ্বীপে তার বাস। ইয়াডমন নামে এক নাগরিকের ক্রীতদাস ছিলেন তিনি। ঈশপ দেখতে ছিলেন কদাকার। কিন্তু বুদ্ধিতে ছিলেন অপরাজেয় আর রঙ্গরসে অদ্বিতীয়।.
88 তিনি বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাঁর শিক্ষাপ্রদ অমর কাহিনিগুলো মানুষকে শোনাতেন। বিখ্যাত গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর মানুষ ছিলেন তার গল্পের ভক্ত। তাঁর মৃত্যুর পর গ্রীসের দার্শনিক জিমট্রিয়াস তার গল্পগুলো সংগ্রহ করে রাখেন। সেই থেকে ঈশপের গল্প আজও সারা বিশ্বের অমূল্য সম্পদ।.
89 আরও কিছু গল্প সেসময় আমার পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল। আলাদিন, সিন্দবাদের কাহিনি আর আলিফ লায়লা। এগুলো সবই আরব্য রজনীর গল্প। আরব্য রজনী হল মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয় গল্প এবং লোককথার একটি সংকলন যা ইসলামের স্বর্ণযুগে আরবিতে সংগৃহীত হয়েছিল। এটি অ্যারাবিয়ান নাইটস নামেও পরিচিত।.
90 তিনি তাঁর স্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং একের পর এক কুমারী বিয়ে করে তাঁদের পরের দিন সকালেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া শুরু করেন যাতে তাঁরা প্রতারণার সুযোগই না পায়। রাজার উজির ছিলেন কুমারী সন্ধানের দায়িত্বে। রাজ্যে আর কোনও কুমারী খুঁজে না পেয়ে অবশেষে উজির নিজের কন্যার সঙ্গে রাজার বিয়ে দেন।.
91 লেখক তালিকার মাধ্যমে প্রায় ১০০ বছরের লেখকদের মধ্যে যে সেতুবন্ধনের প্রচেষ্টা করা হয়েছে তার জন্য সম্পাদকের প্রশংসা প্রাপ্য। সাধারণত সংকলনের শিরোনামে পাঠকের কাছে প্রতিভাত হয় কাহিনির প্রকৃতি। কিন্তু এই সংকলন রহস্য ও ভৌতিক দুই আমেজের মিশ্রণ যা পাঠককে ভাবাবে এবং উপভোগ্য হবে আরও বেশি।.
92 সেখানে বসে বসেই পৃথিবীর মানুষসদৃশ প্রাইমেটদের মধ্যে নিজেদের জিন প্রতিস্থাপন করে করে মানবসভ্যতা তৈরির কাজে তখন তারা ব্যস্ত।... গ্যালাক্সির যে দিকটায় দেবতা-জীবের বাস, তার একেবারে উল্টোদিকে, হাজারো পারসেক পথ পেরিয়ে এদের ঘাঁটি। দেবতাদের তুলনায় এদের টেকনোলজি খানিকটা পিছিয়ে ছিল।.
93 ব্যাগ নিয়েই সারাদিন ঘোরাঘুরি হবে। হোটেলে শুধু রাতটুকু কাটাব, তাই লাগেজ খুব কিছু নেওয়ার নেই। তাও বৃষ্টির জন্য এক সেট জামাপ্যান্ট বেশি নিতেই হয়, ক্যামেরা, চার্জার, ব্রাশ - এই তো। খাওয়া কোথায় হবে জানি, থাকা কোথায় জানি না। আমার অফিস হল গিয়ে তেপান্তরে, ট্রেন হল গিয়ে ভুশুণ্ডির মাঠে।.
94 এবার দুটোকে মেলাতে গেলে কোন পথটা সোজা হয় ভাবছিলাম। সেদিনই আবার দেখি একগাদা কাজ এসে হাজির। তেপান্তর থেকে ভুশুন্ডি যাব, তাই সময় নিয়ে বেরোতে হবে - মহাযন্তন্না। সে যা হোক, সব সামলে, সৌগতদার থেকে খানতিনেক বই নিয়ে (অফিসেই দিয়ে গেল। বন্ধুভাগ্য আমার বরাবরই ভালো আর কী।) একটা খালি বাসে ওঠা গেল।.
95 কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে গেলে আমি চতুর্শ্চক্র যানে মোটেই চাপতে চাই না। মোটরবাইকে ঘুরতেই বেশি পছন্দ করি। প্রকৃতিটাকে আরও বেশি কাছে থেকে অনুভব করা যায়। কিন্তু আমার পছন্দের ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ-এর ওপর বুবুনের একরোখা বিতৃষ্ণা আছে। খুব উঁচু এই বাইকে চেপে ও ভীষণ অস্বস্তি বোধ করে।.
96 অবশ্য ব্যতিক্রম ছিল বইয়ের ব্যাপারে। বই উপহার পেতে ভালো লাগত এবং বইয়ের দোকানে গেলে একসাথে অনেক বই কিনে ফেলতাম। আর ভালোবাসতাম গল্প শুনতে। ঠাকুমাকে মনে আছে আবছা আবছা। তিনি আমাকে মেছোভূতের গল্প শোনাতেন। মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের কাছে গোপালনগর আমাদের আদি নিবাস। ঠাকুমা বিয়ের পর বছর পাঁচেক ওখানে থাকেন।.
97 সেই রাতেই বাবা ট্রাঙ্ক-কল করে ঠাকুমার মৃত্যুসংবাদ দিলেন। মৃত্যুকে আমার সেই প্রথম জানা। কয়েকদিন পর মা আমাকে নিয়ে বম্বে গেলেন। আমার জেঠতুতো তিন দাদা। মনে আছে, আমি অত শোক বা দুঃখ বুঝিনি। তিন দাদার সঙ্গে সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম। ঠাকুমার কাজ হয়ে যাওয়ার পরও বেশ কিছুদিন বম্বেতে ছিলাম।.
98 আর রেডিমেড হাফপ্যান্ট। তারপর সোজা বাবার হাত ধরে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে চিনেদের দোকান থেকে জুতো। তবে দিদির সঙ্গে বার হলে নিউ মার্কেটটা একবার ঘুরতে যাওয়া হত। তখন আমাদের ছোটোবেলায় একটা মজার পোশাক পাওয়া যেত। এখনও পাওয়া যায় বোধহয়। বেশ উর্দিধারী সিপাহীদের পোশাক। মাথায় অলিভ কালারের টুপি।.
99 কিছুই না, জুতোর ভেতরের খোলটা তুললে একটা ছোট্ট কম্পাস বসানো ছিল। সেই প্রথম বাবার হাত ধরে ফুটনানি ম্যানসনে, ধর্মতলায় বাটার দোকানে ঢোকা। জুতো কিনলে যে সুন্দর হলুদ রঙের মুখোশ ফ্রি পাওয়া যায় আর সঙ্গে দুটো বেলুন, এ তথ্য জানলাম তখনই আর সেটা কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের থেকে কিছু কম আনন্দের ছিল না।.
100 কিছুটা স্বাধীনতা পেলেই সেটাকে আরও একটু বেশি করে অধিকারে আনা ওই বয়সের ধর্ম। চারবন্ধু চলে গেলাম নিউ মার্কেট। ওই অবধি চিনি। তারপর নিজামে ঢুকে রোল খেলাম। সেই জীবনে প্রথম রোল খাওয়া। পুজোয় বার হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে নিজামে রোল খেয়েছি, নিজেকে বেশ লায়েক লায়েক মনে হচ্ছিল। তখনও আমাদের মধ্যে একটা খেলার চল ছিল।.
101 কারোরই একশোর কম হত না। আসলে একই ঠাকুর, যাতায়াতের পথে তিনবার দেখলাম ওটা, মানে তিনটে ঠাকুর দেখা হয়ে গেল। আসলে আমাদের ওই কৈশোরে আনন্দ ছিল আদিগন্ত বিস্তৃত। বৈভবের এত প্রাচুর্য ছিল না এখনকার মতো। ছিল মারফি রেডিও, বীরেন ভদ্রের গলায় মহালয়া, স্বচ্ছ আকাশ। সপ্তমী আর নবমীতে মায়ের হাতের পাঁঠার ঝোল।.
102 ভারতবর্ষে বেশির ভাগ অঞ্চলের ক্যালেন্ডার চান্দ্র-সৌর হলেও বাংলা ক্যালেন্ডার কিন্তু সৌর। ব্যাপক প্রচলিত গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারও সৌর হওয়ায় এই দুটো ক্যালেন্ডারের মধ্যে কোনও তফাত থাকা উচিত নয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, আমাদের বাংলা ক্যালেন্ডারে বছর শুরু হয় গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারের ১৪ বা ১৫ এপ্রিল।.
103 ১৯৫২ সালে ভারত সরকার বিজ্ঞানী ড. মেঘনাদ সাহার নেতৃত্বে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি গঠন করেন। ১৯৫৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা পঞ্জিকায় কয়েকটি পরিবর্তন সুপারিশ করেন। এই সুপারিশে বৈশাখ থেকে ভাদ্র মাস ৩১ দিনে এবং আশ্বিন থেকে চৈত্র মাস ৩০ দিনে করার কথা বলা আছে।.

Связаться
Выделить
Выделите фрагменты страницы, относящиеся к вашему сообщению
Скрыть сведения
Скрыть всю личную информацию
Отмена